![]() |
‘বাবা, আমার জন্মদিনে নতুন জামা কিনে দিবা না? কেকটা যেন বড় হয়। জন্মদিনে নানি-মামারা আসবে না? কাকে কাকে দাওয়াত দিবা? আমার বন্ধুদের সবাইকে আসতে বলব কিন্তু। বেশি করে বেলুন কিনে আনবা...।’ নিজের জন্মদিনকে ঘিরে শিশু মুহিন ইসলামের আগ্রহের যেন শেষ ছিল না! সপ্তাহখানেক ধরে সে বারবার এসব কথা বাবা-মাকে বলছিল।
গতকাল শনিবার ছিল মুহিনের অষ্টম জন্মবার্ষিকী। সন্তানের জন্মদিন পালনের জন্য বাবা-মায়েরও ছিল সাধ্যানুযায়ী প্রস্তুতি। সকাল থেকেই শুরু হয় আয়োজন। বিকেল গড়াতেই আত্মীয়স্বজনে বাড়ি ভরপুর। মাংস, পোলাও, পিঠা ও পায়েসের আয়োজন করা হয়েছে। মুহিনের জন্য নতুন জামা কিনে এনেছেন বাবা। সবকিছু দেখে মুহিনের সে কী আনন্দ! চারদিকে ছোটাছুটি!
মুহিনের মা ব্যস্ত রান্নাবান্না ও আত্মীয়স্বজন সামলাতে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বাজার থেকে ইংরেজিতে ‘হ্যাপি বার্থডে মুহিন’ লেখা একটা কেক নিয়ে আসেন বাবা। কেক কাটার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মুহিন নেই! ঘরে-বাইরে কোথাও না। গলদঘর্ম বাবা-মা প্রতিবেশীদের এ-বাড়ি ও-বাড়ি খুঁজে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে আগত আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরাও মুহিনকে খুঁজতে বের হন। চারদিকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে ‘ছেলেধরা’ মুহিনকে ধরে নিয়ে গেছে। এরই মধ্যে প্রতিবেশীদের কেউ একজন বলেন, সন্ধ্যায় তিনি মুহিনকে বাড়ির পাশে থাকা গভীর গর্তের দিকে যেতে দেখেছেন। এ কথা শুনে সবাই ছুটলেন সেই গর্তের দিকে। গলাপানির ওই গর্তে নেমে খুঁজে পাওয়া যায় মুহিনকে। সেখান থেকে উদ্ধার করে মুহিনকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


No comments:
Post a Comment