Wednesday, July 10, 2019

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী। ছবি : ফোকাস বাংলা

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করতে হবে। অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। এখন থেকে যেসব জেলায় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হবে তার আশপাশের যত সরকারি কলেজ থাকবে সবগুলো ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হবে।

মঙ্গলবার শেরেবাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৩০ হাজার, ৬০ হাজার শিক্ষার্থী, এটা হতে পারে না। ধারণক্ষমতার বেশি ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা যাবে না, প্রয়োজনে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, রাজধানী সরকারি তিতুমীর কলেজের মাঠটিকে মাঠ হিসেবেই রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে যাতে কোনো অবকাঠামো না হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা বাড়াতেও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল একনেক সভায় সাত হাজার ৭৪৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ের মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি সংশোধিত এবং বাকিগুলো নতুন প্রকল্প। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল হতে ছয় হাজার ৪১৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ১৮৯ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ আকারে এক হাজার ১৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভায় বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অধীনস্থ জরাজীর্ণ ডাকঘরসমূহের সংস্কার/পুনর্বাসন (২য় পর্যায়) প্রকল্পটির ১ম সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২৫ কোটি টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বাঁধ নির্মাণের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে বাঁধটি একবারেই করা যায়, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া নৌ চলাচলের পথ রেখেই হাওরে ব্রিজ করতে বলেছেন। সড়ক-মহাসড়ক তৈরির সময় ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো—৭০৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে বগুড়া (জাহাঙ্গীরাবাদ)-নাটোর জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, ৬৯৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা (মিরপুর)-উথুলী-পাটুরিয়া জাতীয় মহাসড়ক এর নবীনগর হতে নয়ারহাট ও পাটুরিয়া ঘাট এলাকা প্রশস্তকরণসহ আমিনবাজার হতে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকা ডেডিকেটেড লেনসহ সার্ভিস লেন ও বাস-বে নির্মাণ প্রকল্প, ৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে লাকসাম (বিনয়ঘর)-বাইয়ারা বাজার-ওমরগঞ্জ-নাঙ্গলকোট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক বাতির আধুনিকায়ন প্রকল্প (১ম সংশোধিত), ৯৮৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্প, ২২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর আধুনিকায়ন ও শক্তিশালীকরণ এবং ১৩টি জেলা কার্যালয় স্থাপন প্রকল্প, ৩১১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএডিসি’র বিদ্যমান সার গুদামসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন এবং নতুন গুদাম নির্মাণের মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদারকরণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প, ৬০৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নদী তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ভাঙন হতে ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলা সদর সংরক্ষণ প্রকল্প, ১২৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, কক্সবাজার এর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প, ১২০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৯টি ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প, দুই হাজার ৫২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যুত্ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, সিলেট বিভাগ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, এক হাজার ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুত্ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

No comments:

Post a Comment