![]() |
| সুমাইয়া আক্তার বর্ষা, পাশে তার লেখা চিঠি। ছবি: ইত্তেফাক |
রাজশাহীর মোহনপুরে আত্মহননকারী সেই স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বর্ষাকে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে ফরেনসিক প্রতিবেদনে। ইতোমধ্যে ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। রাজশাহীর সহকারী পুলিশ সুপার সুমন দেব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২৭ জুন রাজশাহীর শিশু ও নারী নির্যাতন আদালত-২ এ বর্ষার ফরেনসিক প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বর্ষাকে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন এ মামলাটিতে ধর্ষণের অপরাধের ধারাটিও যুক্ত হবে।
আত্মহত্যার আগে সুমাইয়া আক্তার বর্ষা এক চিঠিতে লিখেছে, ‘প্রিয় বাবা-মা তোমাদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি তোমাদের থেকে অনেক কিছু পেয়েছি, অনেক আদর, অনেক ভালোবাসা। কিন্তু একটা মেয়ের কাছে তার মানসম্মান সবচেয়ে বড়। আমি আমার লজ্জার কথা সবাইকে বলতে বলতে নিজের কাছে অনেক ছোট হয়ে গেছি। প্রতিদিন পরপুরুষের কাছে এসব বলতে বলতে আমি আর পারছি না। অপরাধীকে শাস্তি দিলেই তো আমার মানসম্মান ফেরত পাব না। তাই আমাকে ক্ষমা করো।’
পুলিশ সূত্র জানায়, মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী বর্ষাকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে প্রতিবেশী মুকুল। গত ২৩ এপ্রিল এ নির্যাতনের পর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে তার পরিবারকে হেনস্থা করেন মোহনপুর থানার ওসি আবুল হোসেন। চারদিন ধরে মামলা না নিয়ে নানাভাবে টালবাহানা করেন ওসি। অবশেষে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহর হস্তক্ষেপে চারদিন পর ২৭ এপ্রিল মামলা নেন ওসি।
ওই মামলায় মুকুলসহ ও বর্ষার সহপাঠী সোনিয়াসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এরপর থেকে মুকুলের পরিবারের সদস্যরা বর্ষাকে নানা ধরনের কটূক্তির পাশাপাশি অপবাদ দিতে থাকে। এ অপমানে গত ১৬ মে নিজ ঘরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বর্ষা।
এরপর থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন তার বাবা। এ মামলাতে মুকুল ও তার মাসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় মুকুলসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
মুকুল এখনো জেলহাজতে রয়েছে। বর্ষার আত্মহনন মামলা তদন্তের স্বার্থে ওসি আবুল হোসেনকে গত ২০ মে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।

No comments:
Post a Comment